ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ [ RM নির্ণয় পদ্ধতি ] |
ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ [ RM নির্ণয় পদ্ধতি ] | Electrical Wires and Cables Bangla
ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ [ RM নির্ণয় পদ্ধতি ] | Electrical Wires and Cables
আপনাদের অনেকেরই চাহিদা অনুযায়ী আজ আপনাদের জন্য ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ পদ্ধতি তুলে ধরছি । এখানে আমরা জানতে পারবো কি করে হিসেবের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্যাবলের আর.এম (RM) নির্ণয় করা যায় । যারা আমাদের অনুরধ করেছিলেন তাদের জন্যতো বটেই, যারা এই নির্ণয় পদ্ধতি জানেননা তাদের জন্যও আমাদের ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারনের আজকের আয়োজন ।
আজ আমরা যেসকল মাধ্যম ব্যাবহার করে ক্যাবলের আর.এম (RM) নির্ণয় করবো সেগুলো হলঃ
১। লোডের মাঝে প্রবাহিত কারেন্ট নির্ণয় পদ্ধতি ।
২। ক্যাবল ওয়ারিং পদ্ধতি এবং ক্যাবলের ধরন নির্ণয় পদ্ধতি ।
৩। ক্যাবলের উপরে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার প্রভাব সমূহ ।
৪। ভোল্টেজ ড্রপ নির্ধারণ পদ্ধতি ।
আর.এম (RM): আমরা যেহেতু ক্যাবলের আর.এম (RM) নির্ণয় করতে চলেছি তাই আমাদের আগে জানা উচিৎ আর.এম (RM) কি এবং এর মানে কি । আর.এম (RM) এর ইংরেজিতে মানে হচ্ছে রোপ মাল্টি স্ট্রান্ড (Rope Multi strand) । মূলত আর.এম (RM) বলতে বহু খেই বিশিষ্ট গোলাকার প্রস্থছেদ আকৃতির ক্যাবল বঝানো হয় ।
লোডের মাঝে প্রবাহিত কারেন্ট নির্ণয় পদ্ধতি
মনেকরি,
একটা বাসার সব ধরনের জন্ত্রপাতির পাওয়ার এবং মোট ওয়ারিং যোগ করে আমাদের মোট পাওয়ার হলো ৭৫০০W,
আমরা সকলেই জানি আমাদের যে লোড হবে তার থেকে ২০% অতিরিক্ত লোড ধরে নিয়ে আমাদের হিসেব করতে হবে কারন এটা হচ্ছে ক্যাবল সিলেকশন করার আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারণ করা । তাই আমরা ২০% লোড মোট পাওয়ারের সাথে যোগ দিব।
সুতরাং, আমাদের মোট লোড দারাচ্ছে,
= [ ৭৫০০+(৭৫০০ x ২০/১০০) ]
=৯০০০W
আমাদের দেশে ফেস কারেন্ট ধরা হয় ২২০ ভোল্ট এবং পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান ধরা হয় ০.৯ ।
সুতরাং আমাদের মোট কারেন্ট হবে,
=[৯০০০/(২২০ x ০.৯)]
= ৪৫.৪৬ এম্পিয়ার ।
ক্যাবলের ওয়ারিং পদ্ধতি এবং ক্যাবলের ধরন নির্ণয় পদ্ধতি
আমরা নানারকম ভাবে ক্যাবল ওয়ারিং করে থাকি, যদি আমাদের বাসাবাড়িতে ক্যাবল দেয়ালের ভেতরে দিয়ে টানা হয় তাহলে আমাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে । কারন ক্যাবলের ওয়ারিং পদ্ধতি ক্যাবলের রেটেড এম্পিয়ারের উপরে কিছুটা প্রভাব ফেলে । সাধারণত ক্যাবলের ভেতরে দিয়ে জখন কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন ক্যাবল গরম হয়ে যায় । ক্যাবল ঠাণ্ডা থাকলে এটা প্রকৃত কাজ করবে, অনেক সময় অতিরিক্ত গরম হয়ে ক্যাবল পুড়েও জেতে পারে । তাই ক্যাবলের তাপমাত্রা যতোটা পারা যায় ছরিয়ে পরার বাবস্থা রাখতে হবে ।
আবার অনেক সময় আমরা ক্যাবলের ওয়ারিং দেয়ালের বাহিরে দিয়ে করে থাকি, এই ক্ষেত্রে বেশ ঠাণ্ডা থাকে ক্যাবল । তাই বলা যায় ওয়ারিং পদ্ধতির উপরে নির্ভর করে আমাদের ক্যাবলের ধরন নির্ধারণ করা উচিৎ ।
ক্যাবলের উপরে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার প্রভাব সমূহ
উপরের লিখাটা থেকে আমরা পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার প্রভাব কিছুটা বুঝতে পেরেছি । ওইখানে থেকে আমরা বলতে পারি যে ক্যাবলের আশেপাশে যে মাধ্যম থাকবে তাতেই ক্যাবলের তাপমাত্রা ছরিয়ে পরবে । তাই খুব সহজেই বলা যায় দেয়ালের ভেতরে দিয়ে টানা ক্যাবলের তুলনায় দেয়ালের বাহিরে দিয়ে টানা ওয়ারিং এর তাপমাত্রা কম থাকে । চলুন একটা হিসেব করে ফেলি,
মনেকরি,
আমাদের পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা চল্লিশ (40˚) সেন্টিগ্রেড , আমাদের কাজ হলো এই গুনিতক এর সাথে ক্যাবলের এম্পিয়ারের গুন দেয়া । আমাদের উদাহারনের এম্পিয়ারকে গুন দেয়ার পরে পাব, 40˚ সেন্টিগ্রেড এর গুনিতক হচ্ছে ০.৮৭ ।
= [৪৬ X 0.87]
= 80.02 এম্পিয়ার
আমরা জানি, ১০ আর.এম ক্যাবলের কারেন্ট বহন ক্ষমতা হচ্ছে ৪০ এম্পিয়ার ।
তাই, তাপমাত্রা এর গুনিতক দিয়ে ক্যাবলের কারেন্ট বহন ক্ষমতাকে গুন দিলে আমরা পাই,
=[৮০ x ৮৭]
= ৩৪.৮০ এম্পিয়ার , অথবা ৩৫ এম্পিয়ার
সুতরাং আমরা ১০আর.এম (RM) ক্যাবল এখানে ব্যবহার করতে পারি, তাতে কোন সমস্যাই হবেনা ।
ভোল্টেজ ড্রপ নির্ধারণ পদ্ধতি
যেহেতু এখানে আমরা ১০আর.এম (RM) ক্যাবল ব্যবহার করছি আর আমাদের মোট কারেন্ট হচ্ছে ৪০ এম্পিয়ার । সুতরাং 4.44 mV/A/M হচ্ছে আমাদের ভোল্টেজ ড্রপ ।
মনেকরি,
ক্যাবলের সর্বমোট দৈর্ঘ্য দেয়া আছে ৩০ মীটার । তাহলে ৪০ এম্পিয়ার কারেন্ট প্রবাহের কারনে ভোল্টেজ ড্রপ হচ্ছে,
=[০.০০৪ x ৪০ x ৩০]
=৪.৮ ভোল্ট ।
আবার, ইন্সটিটিউট অব ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স (IEEE) এর নীতিমালা মতে ভোল্টেজ ড্রপ আমাদের সাপ্লাই দেয়া ভোল্টেজের ২.৫% এর বেশি হতে পারবেনা । তাই আমাদের সাপ্লাই দেয়া ভোল্টেজের দিকে খেয়াল করলে দেখতে পাব যে সাপ্লাই দেয়া হয়াছিল ২২০ ভোল্ট যার ২.৫% ড্রপ হচ্ছে ৫.৫ ভোল্ট যেটা কিনা ৪.৪৮ ভোল্ট এর তুলনায় বেশি হচ্ছে । এটা মানে হচ্ছে আমরা যে ক্যাবল দিয়ে ওয়ারিং করছি সেটা একদম ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই ।
আমাদের সাপ্লাই দেয়া ভোল্টেজ অনুযায়ী যদি ভোল্টেজ ড্রপ বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আমাদের ক্যাবলের মান আরো বারাতে হবে । এটা কোন ভাবেই ২.৫% এর বেশি হওয়া যাবেনা ।
এটাই ছিলো আমাদের আজকের ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবলের সাইজ নির্ধারণ পদ্ধতি । আমাদের লিখাতে ভুল হলে আপনাদের নির্দেশনা একান্ত কাম্য । লিখাগুলো ভালো লাগলে কমান্ট, লাইক এবং শেয়ারের মাধ্যমে সবার মাঝে ছরিয়ে দিন । ভাল থাকুন, সাথে থাকুন shahinbabuinfo.blogspot.com
![ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল সাইজ নির্ধারণ [ RM নির্ণয় পদ্ধতি ] | Electrical Wires and Cables Bangla](https://eeecareer-com.cdn.ampproject.org/i/eeecareer.com/wp-content/uploads/2018/04/Untitled-1.png)






No comments
Write your comment